পুঠিয়া রাজবাড়ির ইতিহাস
পুঠিয়া রাজবাড়ির ইতিহাসঃ
পেজ সূচিপত্রঃ
পুঠিয়া রাজবাড়ি বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক রাজবাড়ি। এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং সুন্দর রাজবাড়িগুলোর মধ্যে একটি। পুঠিয়া রাজবাড়ির প্রতিষ্ঠা ১৮শ শতকের প্রথম দিকে। এটি রাজশাহী অঞ্চলের জমিদারদের মধ্যে অন্যতম। পুঠিয়া রাজবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাজা রাধাকান্ত রায়। তিনি ছিলেন একজন প্রভাবশালী জমিদার এবং তার শাসনামলে পুঠিয়া অঞ্চলে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে।পুঠিয়া রাজবাড়ির ইতিহাস, স্থাপত্য, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবদান এবং মন্দির গুলোর বর্তমান অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
পুঠিয়া রাজবাড়ির স্থাপত্য মূলত বাংলার ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত। এখানে বিভিন্ন ধরনের মন্দির, প্যাগোডা এবং রাজবাড়ির ভবন রয়েছে। রাজবাড়ির প্রধান ভবনটি একটি বিশাল এবং সুন্দর কাঠামো, যা স্থানীয় স্থাপত্যের নিদর্শন। পুঠিয়া রাজবাড়ির আপনার মূল আকর্ষণ থাকবে দোতলার বারান্দায়, কারুকাজে পুঠিয়া রাজবাড়ীর দোতালায় জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে। পুঠিয়া রাজবাড়ীকে পাঁচ আনা বলে আখ্যায়িত করা হয়।
পঞ্চরত্ন গোবিন্দ মন্দিরঃ
গোবিন্দ মন্দির নির্মাণ করা হয় ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে। এই মন্দিরটা নির্মাতা
রাজা, প্রেমো নারায়ন দাস। গোবিন্দ মন্দির পুরোটাই পোড়ামাটির ফলক দিয়ে তৈরি
নির্মাণ করা হয়েছিল। মন্দিরের দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম এবং
ভাস্কর্য রয়েছে, যা দর্শকদের আকর্ষণ করে। মন্দিরের নির্মাণশৈলী এবং অলঙ্করণ
স্থানীয় শিল্পীদের দক্ষতার পরিচয় দেয়।মজার বিষয় হলো পুঠিয়া রাজবংশের
জন্ম হয়েছিল ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে যার কারণে গোবিন্দ মন্দির টি তাদের কাছে ছিল খুব
প্রাণপ্রিয় মন্দির। এই মন্দিরটি তে আপনি দেখতে পাবেন মুঘল আমলের শিল্প কাজ। মূলত
হিন্দুদের পৌরাণিক কাহিনী রামায়ণ-মহাভারতের কাহিনী ফুটে উঠেছে মন্দিরটির
দেওয়ালে। এছাড়াও এই মন্দিরটির আশেপাশে রয়েছে দুর্গা,জগদ্ধাত্রী মন্দির যা ১৮৯৫
সালে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়ে যায়।
পুঠিয়া রাজবাড়ি শিব মন্দির ঃ
পুঠিয়া রাজবাড়ীর শিব মন্দির কে ভুবনেশ্বর শিব মন্দির বলা হয়ে থাকে। এই মন্দিরটির নির্মাতা রাণী ভুবন মোহিনী বাংলা ১২৩২ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল, এবং ইংরেজি ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে। বাংলাদেশ জাদুঘর এই মন্দিরটিকে পঞ্চরত্ন নাম দিয়ে থাকেন ১৯৭২ সালে যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ কর্তৃক নির্ধারণ করা হয়। এটা এখন রাষ্ট্রীয় সম্পদ এবং হিন্দুদের পবিত্র স্থান। সনাতন রীতিমতে এখনো বাৎসরিক পূজা করা হয় যেমন- শিবরাত্রি ও বম বম। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় শিব লিঙ্গ এখানে দেখতে পাবেন।
পুঠিয়া রাজবাড়ীর রথ মন্দিরঃ
শিব মন্দিরের ঠিক পূর্ব দিকে অবস্থিত মন্দিরটি হল রথ মন্দির। যা আপনার বিশেষ
নজর কারবে। ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে শিব মন্দিরের সাথে এই মন্দিরটিকেও নির্মাণ করা
হয়েছিল। এই মন্দিরটি ও নির্মাণ করেছিলেন রানী ভুবন মোহিনী।
পুঠিয়া রাজবাড়ীর দোল মন্দিরঃ
রাজবাড়িটির প্রবেশপথের পূর্ব দিকে দেখতে পাবেন দোল মন্দির । এটি চারতলা বিশিষ্ট
আরেকটি মন্দির এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন রাজা ভূবেন্দ্র নারায়ণ রায় ।
এটা ১৭৫৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত যা মুঘল আমলে তৈরি করা হয়েছিল। এটা দেখতে কিছুটা
বাংলা ব্রিজের মত যা দেখে ব্রিটিশদের ক্যাম্পের মতো লাগতে পারে। কিন্তু এ
ধারণাটি একদম ভুল, এটা আসলে দোল মন্দির। এই মন্দিরটিতে বছরে একবার দোলযাত্রা
পালন করা হয়ে থাকে।
পুঠিয়া রাজবাড়ীর হাওয়াখানাঃ
রাজা এবং রাজ পরিবারের অবকাশের জন্য চারানির জমিদার পুঠিয়া রাজবাড়ী থেকে দুই
কিলোমিটার দূরে একটি হাওয়াখানা নির্মাণ করেন। গ্রামের প্রায় ১০
একর জমি নিয়ে পুকুরটি অবস্থিত সেখানে দেখতে পাবেন একটি হাওয়াখানা
ভবন।
আরো সব তথ্য পেতে কিউট ফাইবারের সঙ্গে থাকুন!😍
কিউট ফাইবারেরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url