অর্জুন গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা
আমাদের চারপাশের সৃষ্টিকর্তা নানান ধরনের গাছপালা সৃষ্টি করে রেখেছেন। এর মধ্যে সৃষ্টিকর্তার ঔষধি গাছ হিসেবে সৃষ্টি কৃত গাছ অর্জুন গাছ। অর্জুন গাছ হয়তোবা আমরা সবাই চিনি । আবার কেউ নাও চিনতে পারি। আয়ুর্বেদিক ভাবে অর্জুন গাছ একটি ঔষধি গাছ।
পেজ সূচিপত্রঃ
অর্জুন গাছের ছাল কোথায় পাওয়া যায়
অর্জুন গাছের ছাল কোথায় পাওয়া যায় এ প্রশ্নটা সবার মনেই থাকতে পারে। হয়তো বা যারা অর্জন গাছ চিনেন না তাদের জন্য এই প্রশ্ন থেকেই যায়। ভারতবর্ষ, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কায় অর্জুন গাছ বেশি দেখা যায়। । আপনি রাস্তার ধারে বা বাগানে অর্জুন গাছে দেখান পেতে পারেন। বাংলাদেশ রাস্তার ধারে অর্জুন গাছ বেশি দেখা যায়।
এছাড়াও আপনি বাজারে অর্জুন গাছের ছালের পাউডার পাবেন। বাজারে পেস্ট কৃত অর্জুন গাছের ছালের পাউডার কিনতে পারেন। আর যদি আপনি গাছ চিনে থাকেন তাহলে গাছ থেকেও সংরক্ষণ করতে পারেন। আপনি যদি ছাল সংরক্ষণ করেন তাহলে অবশ্যই বয়স্ক গাছ থেকে সংরক্ষণ করবেন।
অর্জুন গাছের ব্যবহার
অর্জুন গাছের সাথে আমরা অতটাও পরিচিত নয় তবে বেশিরভাগ মানুষই অর্জুন গাছকে চিনে থাকে। অর্জুন গাছ একটি আয়ুর্বেদিক ঔষধি গাছ। যা আপনার হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে অর্জুন গাছের বৈজ্ঞানিক নাম টারমিনালিয়া অর্জুনা। আপনার জন্য হতে পারে অর্জুন গাছ দ্বিতীয় প্রাণ।
অর্জুন গাছকে সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা ওষধ হিসেবে কাজে লাগাতে পারি। অর্জুন গাছের ছাল ব্যবহার করি। হার্টের সমস্যার জন্য অর্জুন গাছের ছাল এক অতুলনীয় ঔষধ সমূহ। অর্জুন গাছের ছাল বেশ উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই বলাই যায় অর্জুন গাছের ছালের গুনাগুন ক্ষমতা অনেক।
অর্জুন গাছের ছালকে আমরা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতে পারি এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ব্যবহারসমূহ হলো।
- অর্জুন গাছের ছাল
- অর্জুন গাছের ফল
- অর্জন গাছের পাতা
অর্জুন গাছের ছালকে আমরা প্রতিদিন সকালে পাউডার হিসেবে গ্রহণ করতে পারি। প্রতিদিন সকালে এক চামচ করে অর্জুন গাছের পাউডার সেবনে আমাদের হার্ট সুস্থ এবং সচল থাকে। হার্ড আমাদের অমূল্য এক অঙ্গ। তাই হাটকে সুস্থ রাখতে চাইলে অবশ্যই নতুন গাছের পাউডার প্রতিদিন সকালে নিয়মিত খেতে হবে।
অর্জুন গাছের ফল আমাদের অর্জুন গাছের ছালের মতোই গুণসম্পন্ন ঔষধ। তাই বলাই চলে
অর্জুন গাছের ছাল এবং অর্জুন গাছের ফল দুটোই আমাদের জন্য অনেক উপকারী। অর্জুন
গাছের ফল পেস্ট করে আমাদের অনেক উপকারে আসে। তেমনি অর্জুন গাছের
পাতাও উপকারী এক ঔষধি গুণসম্পন্ন।
আরো পড়ুনঃমুখের ব্রণের কালো দাগ দূর করার উপায়
অর্জুন গাছের ফলের উপকারিতা
অর্জুন গাছের ফলের উপকারিতা বা পাতার উপকারিতা ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মাড়ির রক্ত পড়া রোধে অর্জুনের ফল বিশেষ ঔষধ হিসেবে কাজ করে। অর্জনের ফল মাড়ির প্রদাহ জনিত রোগ নিরাময়ে কার্যকারিতা ভূমিকা পালন করে। এটি অনেক গুণসম্পন্ন একটি ফল যা আমাদের দেহে অনেক গুনাগুন হিসেবে আখ্যায়িত।
অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে খেলে আপনার শরীরে অনেক কাজ করবে। অর্জুন গাছের ছাল পাউডার বা ভিজিয়ে খেলে হার্টের সমস্যা অথবা হাই প্রেসার এর সমস্যা অনেক দ্রুতই সেরে যায়।
অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে গরম জলে ফুটিয়ে নিয়ে ঠান্ডা করে খাওয়া অনেক ভালো। আপনার যদি হার্টের সমস্যা থাকে তাহলে আপনি প্রতিদিন সকালে অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন। এতে আপনার শরীর সুস্থ এবং এনার্জি তে ভরপুর থাকবে।
অর্জুন ছালের গুড়া
অর্জুন ছালের গুড়া আপনি সহজে বানিয়ে নিতে পারবেন। বা বাজারে কিনতেও পাওয়া যায় সেখান থেকেও সংরক্ষণ করতে পারবেন। সবচেয়ে ভালো হয় নিজে ঘরোয়া পদ্ধতিতে অর্জুন ছালের গুড়া তৈরি করা। এর জন্য প্রথমে আপনাকে অর্জুন গাছ থেকে ছাল নিয়ে আসতে হবে। পরবর্তীতে আপনি এই অর্জুন ছালের গুড়া বা পেস্ট হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
নানান প্রদাহ জনিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে অর্জুন ছালের গুড়া এর জুড়ি নেই।
এছাড়াও অর্জুনের ফল বা পাতাও ঔষধি হিসেবে কাজ করে। এক কথায় পুরো গাছের অংশই ঔষধ
হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমাদের বিশ্বে এমন কিছু গাছ আছে যেগুলো সম্পর্কে আমাদের সঠিক
ধারণা নেই।
অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা
সৃষ্টিকর্তা আমাদের চারিপাশে অনেক ধরনের ওষুধি গাছ দিয়ে রেখেছেন।কিন্তু এখন বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা সবাই ছুটছি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দিকে। আপনি অর্জন গাছ চিনেন না এমনটা হতে পারে না ।ভারতবর্ষে ,বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কায় অনেক আছে অর্জুন গাছ। অর্জুন গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হল টারমিনালিয়া অর্জুনা।
আমাদের মনে একটা মাত্র ধারণা আছে যে আমরা হার্টের সমস্যার জন্য অর্জুন গাছের ছাল খেয়ে থাকি। হার্টের জন্য অর্জনের ছাল অনেক উপকারী একটি উপাদান। আপনার হার্টের সমস্যা থাকলে অবশ্যই অর্জনের ছাল খাবেন এতে আপনার হার্ট সুস্থ থাকবে। অর্জুনের ছাল আপনার শরীরে নানান কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে আপনার শরীর যদি কোলেস্টেরল, হাই প্রেসার বা টাই গ্লিসারাইডের সমস্যা থাকে তবে সেটা নির্মূল করতে সাহায্য করে।
অর্জুনের ছালকে আয়ুর্বেদিক হিসেবে অনেক প্রাধান্য দেওয়া হয়। শুধু আয়ুর্বেদিক নয় বিজ্ঞান অর্জুনের ছাল উপকারের সম্পর্কে আখ্যায়িত করে। অর্জুন ছালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আমাদের শরীরে ফ্রি রেটিকাল নিউট্রালাইজ করতে সাহায্য করে। ফ্রী রেটিক্যাল আবার কি অবশ্যই আপনার মনে প্রশ্ন এসে করা নাড়ছে।
আসলে ফ্রি রেটিক্যাল হল এক ধরনের মনিকিউল যা আমাদের শরীরে উৎপন্ন হয় এবং বিভিন্ন টিস্যুতে গিয়ে টিস্যুগুলো ড্যামেজ করে। এবং নানা সমস্যার উৎপন্ন হতে পারে এর মধ্যে আপনার হতে পারে হার্টের সমস্যা ,হাই প্রেসার, ডায়াবেটিস এছাড়াও কিডনির প্রবলেম হতে পারে। এগুলো থেকে রক্ষা পেতে কার্যকরী হিসেবে কাজ করে অর্জুন গাছের ছাল ।
অর্জুন গাছের ছাল সেবনে আপনার সুগারের লেভেল অনেকখানি কমে যায়। এছাড়াও অর্জুন গাছের ছালে রয়েছে এন্টি ক্যান্সার প্রপার্টি যা আপনাকে ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা করবে ।অর্জুন গাছের ছাল খেলে আপনার এনার্জি লেভেল ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে। গবেষণায় দেখা গেছে 100 জনের উপর রিসার্চ করে তাদের সবার এনার্জি লেভেল কম ছিল কিন্তু টানা একমাস অর্জনের গুড়া সেবন করার মাধ্যমে তাদের এনার্জি লেভেল উপরে উঠেছিল।
অর্জুন গাছের ছাল খাওয়ার নিয়ম
অর্জুন গাছের ছাল খাওয়ার নিয়ম হিসেবে পাউডার করে খাওয়া এবংভিজিয়ে খাওয়া।অর্জুন গাছের ছাল পাউডার করে খেলে বেশি তাড়াতাড়ি উপকার পাওয়া যায় ।আপনি অর্জুন গাছের ছাল এর পাউডার প্রতিদিন সকালে এক চামচ করে মুখে নিয়ে কুসুম কুসুম কুসুম গরম জল দিয়ে খেতে পারেন। দ্বিতীয়ত আপনি অর্জন গাছের ছালের গুড়া রাতে ঘুমানোর আগে জলে দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন।
পরের দিন সকালে ফুটিয়ে ছেকে খান। এতে করে এতে করে অর্জুন গাছের ছালের গুনাগুন নষ্ট হয় না। আর আপনি সরাসরি সংরক্ষণ করে থাকেন তবে এক টুকরা অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে ফুটিয়ে নিন যতক্ষণ না জল অর্ধেক হয়ে যাচ্ছে এরপর সেই জল পান করুন।
গাছের অপকারিতা
অর্জুন গাছের ছালের অপকারিতা নেই বললেই চলে। তবে অর্জুন গাছের ছাল ১২ বছর বয়সের নিচে খাওয়া যাবে না এছাড়া গর্ভবতী অবস্থায় অর্জুন গাছের ছাল সেবন থেকে বিরত থাকুন। অর্জুন গাছের ছাল খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে অর্জুন গাছের ছাল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। অর্জুন গাছের ছাল সরাসরি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। খাওয়ার নিয়ম অবলম্বন করুন।
সর্তকতা অবলম্বন
আপনি অবশ্যই ওর সতর্কতা অবলম্বনের সাথে অর্জুন গাছের ছাল খাওয়ার পাশাপাশি আপনার অসুখ এর ঔষধ সেবন ঠিকমতো করতে হবে। পরবর্তীতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আপনি আপনার ওষুধের ডোজ কমিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু একেবারেই ঔষধ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন না। গর্ভবতী অবস্থায় অর্জুন গাছের ছাল খাবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অর্জুন গাছের ছাল খাওয়া ভালো।
আমাদের শেষ কথা
অর্জুন গাছের ছাল, ফল, পাতা সবগুলোতেই ওষুধগুন সম্পন্ন ঔষধিকতার মান রয়েছে। আপনি
যদি হাট দুর্বল রোগী হয়ে থাকেন তবে আপনার জন্য অর্জুন গাছের ছাল বা পাউডার
কার্যকরী একটি ঔষধ হিসেবে ব্যবহারযোগ্য। আমার মতে আপনি প্রতিদিন ধৈর্য ধরে
অর্জনের গাছের পাউডার সেবন করতে পারেন তাহলে দ্রুতই কার্যকর ফল
পাবেন।
এছাড়া আপনি আপনার দৈনন্দিন পেশার, বা হার্টের ওষুধের সাথে অর্জুন গাছের ছাল বা
পাউডার সেবন করতে পারেন। এর সাথে সাথে অর্জুন গাছের ফল খেতে পারেন আমাদের জীবনে
দৈনন্দিন ব্যবহারযোগ্য হিসেবে তুলে রাখতে পারেন অর্জুন ফলকে। অর্জুন ফল অর্জন
গাছের গুরা কার্যকরী একটি ঔষধ।
আরো সব তথ্য পেতে কিউট ফাইবারের সঙ্গে থাকুন!😍
কিউট ফাইবারেরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url